শবে বরাতের নামাজের নিয়ম । শবে বরাতের আমল

Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam

কোরআন হাদিসে না থাকলেও দিনের পর দিন ধরে সাবান মাসের ১৫ তম রজনী/রাত বিশ্বের সকল মুসলিমদের কাছে শবে বরাত বা ভাগ্য নির্ধারণের রাত হিসেবে পরিচিত। এক্ষেত্রে অনেকে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম জানতে চান।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “শবে বরাতের নামাজের নিয়ম । শবে বরাতের আমল” এ।

আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, শবে বরাত কি বা শবে বরাত কাকে বলে, শবে বরাতের আমল, শবে বরাতের আমল, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস কি বলে এবংশবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

শবে বরাত কি

আরবি শাবান মাসের মধ্য রাত অর্থাৎ শাবান মাসের ১৪ এবং ১৬ তারিখের মধ্যবর্তী রাতকে শবে বরাত বলা হয়ে থাকে।

“শব” অর্থ রাত এবং বরাত অর্থ মুক্তি। অর্থাৎ শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত

শবে মেরাজের ১৫ দিন পড়ে শবে বরাত আসে। এবং শবে বরাতের ১৫ দিন পর থেকে শুরু হয় পবিত্র মাহে রমজান। শবে বরাত একদিকে যেমন রমজান খুব নিকটে তা মনে করিয়ে দেয় একইভাবে শবে বরতা মানুষকে আল্লাহর কাছ থেকে নিজেকে নিস্পাপ অরে নেওয়ার এক বড় সুযোগ তৈরি করে দেয়।

আরও পড়ুনঃ ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন।

এবং তার বান্দাদের আলাদাভাবে জিজ্ঞেস করতে থাকেন কার কি লাগবে কার কি দরকার।

কোনও মানুষ এই দিনে যদি কোনও নেক বিষয়ে আল্লাহর কাছে মোনাজাতের মাধ্যমে চেয়ে থাকে তাহলে আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন এবং ব্যক্তির মনের আশা পূর্ণ করে দেন।

শবে বরাত সম্পর্কে নবী করিম (সা:) বলেন,

“এই রাতের হচ্ছে অর্ধ শাবানের মধ্য রাত। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমত দানের উদ্দেশ্যে মনোযোগ দেন।

ক্ষমা প্রার্থনাকারীদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ দান করেন।

এবং বিদ্বেষ পোষণকারীদের আল্লাহ তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে রেখে দেন”। – খণ্ড তিন, শুআবুল ইমান, পৃষ্ঠা নাম্বার ৩৮২।

শবে বরাতের আমল

একদা এক রাতে মুহাম্মদ (সাঃ) এত লম্বা সময় ধরে সিজদারত অবস্থায় ছিলেন যে হজরত আয়েশা মনে করেছেন নবীজি মনে হয় সিজদারত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।

তাই তিনি নবিজির পায়ের বুড়া আঙ্গুল টান দিলেন।

এরপর নবীজি সিজদা শেষ করে বললেন আয়েশা তুমি ভেবেছ আমি মরে গেছি। কিন্তু না, তুমি জান এই রাতে কিসের রাত ? তখন নবীজি শবে বরাতের নামাজে নফল নামাজ আদায় করছিলেন।  

আরও পড়ুনঃ যে দোয়া পড়ে ঘুমালে সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে

শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস এ এসেছে যে, শাবান মাসের মধ্য রাতে অর্থাৎ শবে বরাতের রাতে আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষের দিকে তার রহমতের দৃষ্টি দেন।

মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী বাদে বাকি সকল বান্দা যারা আল্লাহর কাছে অনুগ্রহক আমনা করে তাদের সবাইকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন এবং রহমত নাজিল করেন। – মুসনাদে আহমদ, খণ্ড ৪- পৃষ্ঠা ১৭৬।

শবে বরাত নামাজের নিয়ম

সাধারণত শাবান মাসের অর্ধ রাত অর্থাৎ শবে বরাতে মুসলিম ধর্ম প্রান মানুষেরা নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির সহ্য বিভভিন দোয়া দরুদ পড়ার মধ্য দিয়ে ইবাদত করে থাকে।

শবে বরাতের রাতে ২ রাকাত করে সর্বনিম্ন ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় কতা অতি উত্তম।

তবে এই বিষয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। এই নামাজ আপনাকে এশার সুন্নত নামাজের পর এবং বেতের নামাজের মধ্যে আদায় করতে হবে।

এবার চলুন, শবে বরাতের নামাজের নিয়ত, শবে বরাতের নামাজের নিয়ম এবং শবে বরাতের নামাজের নিয়ত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

আরও পড়ুনঃ শবে বরাতের রোজা কয়টি । শবে বরাত সম্পর্কে বিস্তারিত

শবে বরাতের নামাজের নিয়ত আরবিতেঃ নাওয়াইতুআয়ন উছ ল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাক আতাই ছালাতিত লাইলাতিল বারাতিন নাফ-লি, মুতাওয়া জ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবা তিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ত বাংলায়ঃ “আমি শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ কিবলা মুখী হয়ে আদায় করছি, আল্লাহু আকবর”।

মূলত আপনি যখন শবে বরাতের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে জায়নামাজে দাঁড়ানো মাত্রই শবে বরাতের নামাজের নিয়ত করা হয়ে যায়।

কারণ আপনি শবে বরাতকে কেন্দ্র করেই নফল নামাজের জন নই জায়নামাজে দাঁড়িয়েছেন। কারণ আল্লাহ অন্তর্যামী।

অনেকেই জানতে চায় শবে বরাতের নামাজ কয় রাকাত কিভাবে পড়তে হয় সেই বিষয়ে।

শবে বরাতের নামাজ ১২ রাকাত পড়া সবথেকে উত্তম।

তবে এর থেকে কম বা বেশী পড়া যায়। এ নিয়ে কোনও বাধা নিষেধ নাই।

আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ)

আর শবে বরাতের নামাজ অন্যান্য সময় আদায় করা নফল নামাজের মতোই পড়তে হয়।

নিয়ত করলে ভালো। এরপর সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা পড়ে এক রাকাত এরপরে আবার একই ভাবে দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরানো।

এভাবে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করা শবে বরাতের সবথেকে উত্তম ইবাদত।

শবে বরাতের নামাজ নিয়ে সর্বশেষ

আজকের পোষ্টে আমরা শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে বরাতের ফজিলত, শবে বরাতের আমল সম্পর্কে জেনেছি।

জেনেছি শবে বরাতের নামাজের নিয়ত, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস, শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত, শবে বরাতের রোজা কয়টি সেই বিষয়ে বিস্তারিত।

আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, যখন রাখা লাগবে না

মূলত প্রত্যেক মুসলমানের উচিত যেভাবেই হোক ইসলামের প্রত্যেকটি বিষয়ে সঠিক ভাবে জানা। এবং সেই অনুযায়ী আমল করা।

আশা করছি, শবে বরাতের নামাজের নিয়ত এবং শবে বরাত পালনের নিয়ম, শবে বরাত নামাজের নিয়ত, শবে বরাতের নামাজ কয় রাকাত কিভাবে পড়তে হয় তা বিস্তারিত জানাতে পেরেছিহ।

ইসলাম সম্পর্কিত আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে আমাদের ইসলাম ক্যাটাগরিতে ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে

8 thoughts on “শবে বরাতের নামাজের নিয়ম । শবে বরাতের আমল”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.